বিনোদন ডেস্ক :
জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’। এর এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে শেরপুরে। শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড় এলাকায় অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন মধুটিলা ইকোপার্কে এ অনুষ্ঠানের মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। সীমান্তবর্তী এই পার্কে রয়েছে সবুজের সমারোহ। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ দিয়ে মোড়ানো মঞ্চে ধারণ করা হয় এ পর্ব।
ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত।
ইত্যাদির নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ফাগুন অডিও ভিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আগামীকাল শুক্রবার রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর ইত্যাদির এ পর্ব একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে প্রচারিত হবে।
অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্ব ধারণ করা হয় জুলাই মাসের শুরুর দিকে। গত ২৬ জুলাই এ অনুষ্ঠান প্রচারের কথা থাকলেও বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে প্রচার করা যায়নি।
ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা, সংস্কৃতি, প্রত্নসম্পদ, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় স্থান, আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো সম্পর্কে জানাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ‘ইত্যাদি’ ধারণ করা হয়। নালিতাবাড়ীতে ধারণ হলেও দর্শকরা আসেন ৫০ থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে।
এবারের অনুষ্ঠানে শেরপুরের পালাগানের শিল্পী তারা বয়াতী এবং পান্থ কানাই একটি ভিন্ন রকম লোকসংগীত পরিবেশন করেছেন। গানটির কথা লিখেছেন কবির বকুল।
মনিরুজ্জামান পলাশের কথায় শেরপুর জেলার পরিচিতিমূলক গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেছেন শেরপুরের স্থানীয় শতাধিক বাঙালি ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নৃত্যশিল্পী। নাচটির কোরিওগ্রাফি করেছেন কমল কান্তি পাল, কণ্ঠ দিয়েছেন রাজীব ও তানজিনা রুমা।
দুটি গানেরই সুর করেছেন হানিফ সংকেত এবং সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী।
দর্শক পর্বের নিয়ম অনুযায়ী ধারণ স্থান শেরপুর জেলা ঘিরে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে উপস্থিত দর্শকের মধ্য থেকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের চারজন দর্শক নির্বাচন করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে নির্বাচিত দর্শকদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন বৃহত্তর ময়মনসিংহের সংগীতশিল্পী অনিমেষ রায়।
শিকড়সন্ধানী ‘ইত্যাদি’ সব সময়ই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রচারবিমুখ, জনকল্যাণে নিবেদিত মানুষদের তুলে ধরার পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলের অচেনা-অজানা বিষয় ও তথ্যভিত্তিক শিক্ষামূলক প্রতিবেদন প্রচার করে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের পর্বেও রয়েছে কয়েকটি প্রতিবেদন।
এ পর্বে শেরপুরের ওপর একটি তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন রয়েছে। শেরপুরের বিভিন্ন দর্শনীয়, আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র ও প্রত্নসম্পদের ওপর প্রতিবেদন ছাড়াও এখানকার জিআই পণ্য তুলসীমালা চাল ও ধান–গবেষক চাটকিয়া গ্রামের কৃষক সেন্টু কুমার হাজংয়ের ওপর রয়েছে একটি প্রতিবেদন।
সহিদুল ইসলামের এক অপ্রচলিত শখের দুর্লভ সংগ্রহের ওপর রয়েছে একটি প্রতিবেদন। শেরপুরে হাতি-মানুষের ‘দ্বন্দ্ব’ দীর্ঘদিনের। এ বিষয়েই ইত্যাদির এবারের পর্বে রয়েছে একটি তথ্যভিত্তিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন।
বিদেশি প্রতিবেদন পর্বে রয়েছে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অবস্থিত চীনের কেন্দ্রীয় টেলিভিশন ভবন, চায়না টাওয়ার ও বিশ্বের মহাবিস্ময় চীনের মহাপ্রাচীরের ওপর একটি তথ্যবহুল প্রতিবেদন।
এ ছাড়া শেরপুরের মঞ্চে যথারীতি সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে রয়েছে নানি-নাতির কথার মাতামাতি। এ ছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও রয়েছে বিভিন্ন সামাজিক অসংগতি ও সমাজ সংস্কারের ওপর সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু নাট্যাংশ। নাটক এখন নামে আটক, ফুড ব্লগার, প্রেমে ভিউর প্রভাব, ভিক্ষাবৃত্তিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ, স্বামীর অবৈধ আয়ের দায়, দুর্নীতির গতি ও নীতির দুর্গতি, চোরের মন ছাগল ছাগল, স্বামী চেনার সহজ উপায়, মুখোমুখি দাতা ও গ্রহীতাসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর রয়েছে বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ।
এবারের ইত্যাদিতে সোলায়মান খোকা, জিয়াউল হাসান, সুভাশীষ ভৌমিক, মাসুম বাশার, জিল্লুর রহমান, শবনম পারভীন, আঞ্জুমান আরা বকুল, আমিন আজাদ, মুকিত জাকারিয়া, আনন্দ খালেদ, তারিক স্বপন, জামিল হোসেন, জাহিদ শিকদার, সাদিয়া তানজিন, আনোয়ারুল আলম সজল, বেলাল আহমেদ মুরাদ, সঞ্জীব আহমেদ, সিয়াম নাসির, নিপু, কামাল বায়েজীদ, সাবরিনা নিসা, নাদিয়া হক, সুবর্ণা মজুমদার, মতিউর রহমান, আনোয়ার শাহী, বিনয় ভদ্র, বিলু বড়ুয়া, সুজাত শিমুল, তাসনোভা নিঝুম প্রমুখ শিল্পী অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন পর্বে।